সময় স্বল্পতাসহ নানা কারণে কমে গেছে মানুষের শারীরিক পরিশ্রম করার প্রবণতা । প্রয়োজন ছাড়া মানুষ এখন ঘরের বাইরে বের হতে চান না। যখন বের হন তখন দূরত্ব অল্প হলেও রিকশা বা বাসের শরণাপন্ন হন। চাঁদপুর শহরে সর্বত্র যেন এ চিত্রের দেখা মেলে।
মানুষ এখন এতটাই অলস হয়ে পড়েছে যে দুই মিনিটের রাস্তাও হাঁটতে চায় না। অথচ শারীরিক সুস্থতা থেকে শুরু করে অর্থ ও সময় সাশ্রয়ে হাঁটা যে কতটা প্রয়োজনীয়,তা আমরা সবাই জানি। তবে একটু চেষ্টা থাকলে সম্ভব এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা।
মানুষের মধ্যে সদিচ্ছা তৈরি করে শারীরিক সুস্থতার জন্য ও সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতেই চাঁদপুর শহরে শুরু হয়েছে সামাজিক সংগঠন‘একটি উদ্যোগে’র ‘চলেন হাঁটি’ কর্মসূচি।
আজ শনিবার ভোর ৬টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে শুরু হয় এই কর্মসূচি। এর মূল উদ্যোক্তা সাংবাদিক আলম পলাশ। সকালের মনোরম ও প্রাকৃতিক পরিবেশে এ হাঁটায় অংশ নেন বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষেরা। এমন উদ্যোগে তাঁরা নিজেদের আনন্দের কথা জানান।
হাঁটতে আসা চাঁদপুর জেলা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিয়মিত হাঁটি। শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রত্যেক মানুষের উচিত পরিমিত ব্যায়াম ও নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করা। চাঁদপুর সরকারি কলেজে আজ এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। কলেজ ক্যাম্পাসে হাঁটার সুবিধা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই চমৎকার।’
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মুক্তা রহমান বলেন,‘আমাদের হাঁটার জন্য বড় সমস্যা হলো সড়ক। সেখানে হাঁটার পরিবেশ না থাকায় মন চাইলেও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যখন এমন উদ্যোগের কথা শুনি তখন থেকেই আশা ছিল এখানে আমাদের হাঁটার। অবশেষে,আজ থেকে আমরা পেলাম একটা নিরাপদ হাঁটার জায়গা ও পরিবেশ।’
আফরোজা ইসলাম নামে আরেকজন বলেন,‘আমি নিয়মিত হাঁটি। “চলেন হাঁটি” এ উদ্যোগ আমার খুব ভালো লেগেছে। যিনি উদ্যোগ নিয়েছেন,তাঁকে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। আসুন আমরা সবাই চলেন হাঁটি কর্মসূচিতে যোগ দিই।’
কর্মসূচির উদ্যোক্তা আলম পাশা বলেন,‘সামাজিক মানুষ হিসেবে প্রতিটি মানুষের কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমি সেই জায়গা থেকে এই কাজটা শুরুর পরিকল্পনা করি এবং আজকে “একটি উদ্যোগ”–এর হাত ধরে চলেন হাঁটি কর্মসূচির যাত্রা শুরু হলো। শহরের সড়কগুলোতে হাঁটতে গিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হন। এ জন্য আমি নিরাপদ পরিবেশ ও জায়গা বিবেচনা করে চাঁদপুর সরকারি কলেজকে বেছে নিই। তারপর কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়েছি।”
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অসিত বরণ দাশ বলেন,‘আমাদের অনেক দিনের প্রত্যাশা ছিল নিরাপদে হাঁটার একটি পরিবেশের।
বিশেষ করে যাঁরা সকালে হাঁটেন,তাঁদের জন্য শহরে নিরাপদ পরিবেশ তেমন হয়ে ওঠেনি। নিজেদের প্রয়োজনে আমাদের নিয়মিত হাঁটা উচিত। এ জন্য আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসের হাঁটার রাস্তাও সংস্কার হয়েছে। আজ থেকে সবাই হাঁটা শুরু করেছেন। দিনটি আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। আমি সবাইকে এখানে এসে নিয়মিত হাঁটার আমন্ত্রণ জানাই।’
১ জুন ২০২৪
এজি