নামকরণ : কাল শব্দের অর্থ ধ্বংস এবং বৈশাখ মাসে উৎপত্তি হয় বলে একে কালবৈশাখী নামে অভিহিত করা হয়। গ্রীষ্মকালে বা এপ্রিল –মে মাসে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে মাঝে মধ্যে বিকালের দিকে বজ্রবিদ্যুৎসহ যে প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টি হয় তাকে কালবৈশাখী বলে। কালবৈশাখী ঝড় উত্তর দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে একে ইংরেজিতে নরওয়েস্টার বলা হয়।
বাংলাদেশে কালবৈশাখী ঝড়ের পর একটি বৃষ্টি স্নাত সন্ধা যেখানে ডুবন্ত সূর্যের লাল আভা দৃশ্যমান। কালবৈশাখী একটি স্থানীয় বৃষ্টিপাত ও বজ্রঝড় যা বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অঞ্চলে হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব ভারতে মার্চ থেকে কালবৈশাখী ঝড় দেখা যায়। অনেকসময় এ ঝড় জীবনঘাতি রূপ ধারণ করে। গ্রীষ্ম ঋতুর সঙ্গে হাত ধরাধরি করে এ ঝড়ের আগমন ঘটে। কালবৈশাখীর বায়ুর গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৬০ কিমি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘণ্টায় ১শ’ কিমি-এর বেশিও হতে পারে।
কালবৈশাখীর স্থায়িত্বকাল স্বল্পতর,তবে কখনও কখনও এ ঝড় এক ঘণ্টারও বেশিকাল স্থায়ী হয়। এ সময়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা,আসাম, ত্রিপুরা, বিহার,ছত্তিশগড় ও ঝাড়খণ্ডে প্রায়ই বজ্রবৃষ্টি হয়। কালবৈশাখীর সময়ে যেকোন প্রকার বায়ুযান চালানো বিপদজনক। বিমানচালকেরা কালবৈশাখী ঝড়কে এড়িয়ে চলে। যদিও কালবৈশাখীর সময়কার বৃষ্টিপাত বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার ধান,পাট এবং আসামের চা চাষের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে।
কালবৈশাখীর কারণ : এ অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠস্থ অত্যধিক গরম হলে বাতাস হালকা ও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। উত্তপ্ত হালকা বাতাস সোজা উপরে উঠে শীতল হয়ে কিউমুলাস মেঘ সৃষ্টি করে।
বায়ুমন্ডলের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে কিউমুলাস মেঘ উল্লম্বভাবে কিউমুলোনিম্বাস নামক কালো মেঘ গঠন করে এবং পরবর্তী সময়ে বজ্রঝড়ের সৃষ্টি করে। সাধারণ ঝড়ের সংগে এ ঝড়ের প্রধান পার্থক্য হচ্ছে এ ঝড়ের সঙ্গে সবসময়ই বিদ্যুৎ চমকায় ও বজ্রপাত হয়।
২৫ এপ্রিল ২০২৪
এজি