Tuesday , 7 January 2025

স্বাস্থ্যকর খাদ্যের মাধ্যমে শিশুকে নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব

দেড় বছর বয়সী রাইসা সারাটা সময় ঘর মাতিয়ে রাখে। আর হাঁটা শেখার পর থেকে সারাক্ষণ শুধু এ ঘর ও ঘর দৌড়ে বেড়ায়। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সর্দি আর কাঁশির কারণে একেবারে নেতিয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে রাতের বেলায় জ্বরও আসছে। চার দিন পর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় তার মা-বাবা।

ডাক্তার দেখেই বুঝতে পারে শিশুটি নিউমোনিয়ায় ভুগছে। তবে এখনো প্রাথমিক স্টেজে। কিছু ওষুধ আর খাবারের কথা বলে তিন দিন পর আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বললেন। ওষুধ আর পর্যাপ্ত খাওয়ার পর রাইসার মা সোমা বুঝতে পারে এখন তার মেয়ে অনেকটা সুস্থ। তারপরও তিন দিন পর আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় তাকে। ডাক্তার ওষুধগুলো আরো পাঁচদিন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মুরাদ হোসেন বলেন, নিউমোনিয়া মূলত ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগ। বিভিন্ন ভাইরাস, ছত্রাক, জীবাণুজনিত কারণেই এ রোগের বিস্তার ঘটে। নিউমোনিয়ার কারণে ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার মতে অপরিণত শিশুর জন্ম, বায়ু দূষণ, পরিবেশ দূষণ,বুকের দুধ পানে মায়েদের অনীহা এবং অপুষ্টি মূল দায়ী এই রোগের জন্য।

তিনি বলেন, গুরুতর নিউমোনিয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই নিউমোনিয়া প্রতিরোধে ও এরই মধ্যে যারা এই কঠিন রোগে ভুগছেন তাদের উচিত দ্রুত সেরে উঠতে প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা। এক কথায় কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার প্রতিদিন খাওয়া উচিত।

বিশেষ করে শীতে বাড়ে নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডার প্রকোপ। কারণ শীতে তাপমাত্রা ওঠা-নামা করে। এছাড়া বাতাসে ধুলা-ময়লার আধিক্য ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বড়ে যায়।

আর সর্দি লাগলে নিউমোনিয়ার প্রকোপও বেড়ে যায়। তাই ঠাণ্ডা না লাগানোর দিকে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। ডা. মুরাদ বলেন, নিউমোনিয়া প্রতিরোধে প্রচুর পানি পান করতে হবে। এতে করে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন উপাদান বের হয়ে যায়। ফলে শরীর থাকে সুস্থ।

শীতে ডিহাইড্রেশন এড়াতে পানির পাশাপাশি পান করতে হবে টাটকা ফলের রস। এ সময় যত বেশি তরল পদার্থ শরীরে যাবে, ততই ক্ষতিকারক কণা শরীর থেকে বের হয়ে যাবে। ফলে শ্বাসযন্ত্রও থাকবে সুস্থ। এ রোগ প্রতিরোধে খেতে হবে প্রদাহবিরোধী খাবার। অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে নিউমোনিয়া থেকে দ্রুত আরোগ্য মেলে। এজন্য খেতে হবে বিভিন্ন ধরনের খাবার, বাদাম যেমন- কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিদিনের ডায়েটে বিভিন্ন বীজ ও মুরগির মতো প্রোটিন রাখতে হবে।

তিনি এ সময় প্রচুর শাকসবজি খাওয়ার ব্যপারেও পরামর্শ দেন। বলেন,‘ সুস্বাস্থ্যের জন্য শীতে মৌসুমি সব শাকসবজি খেতে হবে। পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাকসহ মৌসুমি সব সবজি। এসবের পুষ্টিগুণ শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই করতে শক্তি জোগায় এমনকি ফুসফুসসের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।’

শীতে বাজারে মৌসুমি বিভিন্ন ধরনের ফল মেলে, যেগুলোতে ভিটামিন সি ভরপুর থাক। ভিটামিন সি’যুক্ত ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এসবের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি প্রভাব শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। সূত্র : বাসস

২৫ ডিসেম্বর ২০২৩
এজি

এছাড়াও দেখুন

brin tumer

প্রতি বছর দেশে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ২০ হাজার

ব্রেন টিউমার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। ২০০০ সাল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *