Tuesday , 7 January 2025
editroial

পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হোক-এটাই প্রত্যাশা

সারাদেশে ১৫ ফেব্রুয়ারি ২৯ হাজার ৭’শ ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৩ হাজার ৭’শ টি কেন্দ্রে এসএসসি, দাখিল, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনাল প্রায় ২০ লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি দেশের সবচাইতে বড় পাবলিক পরীক্ষা। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু,নকলমুক্ত, প্রশ্নফাঁসের গুজবমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়েছে।

এবার এসএসসি ও সমমান ২০২৪ সালের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১শ ৯২ জন শিক্ষার্থী। সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সারাদেশ থেকে পরীক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১৫ ফেব্রুয়ারি। চাঁদপুরে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী ৭৪ টি কেন্দ্রে অংশ নেবে।

সকল কেন্দ্র সচিবদ্বয়কে পরীক্ষা সুষ্ঠু,সুন্দর ও প্রশ্ন ফাঁসের গুজবমুক্ত পরিবেশে গ্রহণ করতে প্রশাসনকে সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোডের্র অনুসৃত নির্দেশিকা যথাযথভাবে পালনের কথা বলা হয়েছে। চাঁদপুর পুলিশ প্রশাসন থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে আসা অভিভাবকগণের ২শ’ গজের বাহিরে একটু বসার ব্যবস্থা করা যায় কী না- তা ভেবে দেখা বা উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান। কেন্দ্র সচিব মহোদয়গণ আশাকরি-বিষয়টি ভেবে দেখবেন। কেননা এরা আপনাদেরই অভিভাবক।

সভায় পরীক্ষার প্রশপত্র ফাঁস রোধে কোচিং সেন্টারগুলো এক মাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-পরীক্ষা সুষ্ঠু,সুন্দর ও প্রশ্ন ফাঁসের গুজবমুক্ত পরিবেশে রক্ষায় ১৩ ফেব্রুয়ারি- ১২ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। কেন্দ্র সচিব ব্যতীত পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না।

আমরা মনে করি-যে সব শিক্ষার্থী যথাযথ সময়ে ও নিয়মে পড়াশুনে না করে অন্য কোনোভাবে পরীক্ষায় পাশ করতে বা কেউ করাতে চায়-তাদের সেই ধরনের মানসিকতা বর্জন করতে হবে। অসাধুতা অবলম্বন করে পরীক্ষায় পাশ করে দেশ ও জাতির জন্য কিছূই করার সুযোগ হবে না। আধুনিক এ তথ্য প্রযুক্তির যুগে মেধাহীনদের দ্বারা দেশ ও জাতি পথভ্রষ্ট হবে।

এদিকে কোচিং সেন্টার মানে একধরণের শিক্ষামূলক ব্যবস্া প্রতিষ্ঠান। একশ্রেণির ব্যবসায়ীদের জাতিকে ধ্বংস করার এমনিভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেয়ার প্রশ্নই ঊঠে না। অতীতে প্রতিয়মান হয়েছে-নানাবিধ কুট-কৌশল ব্যবহার করে কোচিং সেন্টারগুলো প্রশ্নফাঁসের মত কেলেংকারীর সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তাই শিক্ষা বিভাগের এ ব্যবস্থা। গ্রাম্য একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে-‘–গরম ভাতে বেড়াল বেজাড়’। ফলে এতে কারো কিছূ আসবেও না-যাবেও না। পাশাপাশি পরীক্ষার হলে পর্যবেক্ষকগণের নেতিবাচক ভূমিকাও কারও কাম্য নয়। তা হলে-সেটা হবে ‘বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার মত অবস্থা।’

শিক্ষকগণ হলেন-জাতি গড়ার কারিগর। এমনটিই জাতি আশা করে। নীতি-নৈতিকতা অন্তত: শিক্ষকগণ বিসর্জন দেবে না। পরীক্ষার হলে পর্যবেক্ষকগণের অসাধুতা বা অনৈতিক কর্মকান্ডের সম্পৃক্ততার শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরেই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পর্যবেক্ষককে বহিস্কার করেন। পরদিন নাম ও পরিচয় সহ পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার হয়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকে।

২০২৩ সালে চাঁদপুর সদরের সুনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানের একজন কেন্দ্র সচিব তথা প্রধানশিক্ষককে তার পরীক্ষার পুরো দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যহতি দেয়া হয়েছিল। ভাগ্য ভালো-তাকে হাতকড়া লাগিয়ে জেলে পাঠানো হয় নি। ২০২৪ সালের পরীক্ষায় তাকে পুনরায় কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব দেয়া বোধ হয় ঠিক হবে না।

তাই পরীক্ষা ব্যবস্থায় নৈরাজ্য প্রতিরোধ করে আগামি দিনের‘স্মার্ট নাগরিক’ হওয়ার পথ সুগম করার দায়িত্ব আমার,আপনার তথা সকলের উপর ন্যস্ত।

১৫ ফেব্রুেয়ারি ২০২৪
এজি

এছাড়াও দেখুন

editroial

ছাত্র-জনতার বিজয় : প্রতিশোধপরায়ণতা পরিহার করুন

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি থেকে পর্যায়ক্রমে সৃষ্ট গণ-আন্দোলন অবশেষে সরকার পতনের মধ্য দিয়ে বিজয়লাভ করল। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *