চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা,পদ্মা, মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এ বছর হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলায় ২০২৩-’২৪ বছরে ১ হাজার ৫৫ হেক্টরে আবাদ এবং সরিষার উৎপাদন ১ হাজার ৮শ মে.টন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে, হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ৮শ’ ৫৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১শ’ ১১ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ২শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২শ’ ৯০ মে.টন। কচুয়ায় চাষাবাদ ৫শ’ ১৪ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬শ’৬৮ মে.টন।
হাজীগঞ্জ শাহরাস্তি উপজেলার ভেতর দিয়ে ডাকাতিয়া নদী বয়ে যাওয়ায় এর দু’তীরে এবং কচুয়াসহ বোয়ালজুরি খালের দু’তীরে প্রতিবছরই ব্যাপক হারে সরিষা চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়ে থাকে । এদিকে চাঁদপুর,হাইমচর ,মতলব উত্তর মেঘনা নদীরতীর সংলগ্ন এলাকাগুলোতে ব্যাপকহারে এ সরিষা চাষাবাদ ও উৎপন্ন হয়ে থাকে।
মেঘনার পশ্চিমতীরে রয়েছে ১১টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল।চাঁদপুর জেলায় ধান,পাট,পেঁয়াজ, রসুন ও ভূট্টা এর পরেই সরিষার স্থান। আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ,পরিবহনে সুবিধা,কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ,কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা,বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে সরিষা চাষ করছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলেন,‘ হাজীগঞ্জ উজজেলায় সরিষা চাষাবাদে ১২শ চাষিকে ১ মে.টন সরিয়ার বীজ ও সার প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। ’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে,চাঁদপুর সদরে চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৬শ’১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭শ ৯০ মে.টন। মতলব উত্তরে চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৫শ ৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৯শ ৫৬ মে.টন।
মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ৭শ’ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯শ৩৬ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ২শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২শ’৬০ মে.টন এবং হাইমচরে চাষাবাদ ২শ’ ৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩শ’২৫ মে.টন।
বিশেষ করে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক সরিষা চাষাবাদ ও উৎপাদন করে থাকে চাষীরা। অতীব দু:খের বিষয়-নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষীদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো।
চরাঞ্চলগুলি হলো-মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম,সবজি কান্দি, জহিরাবাদ,ষষ্টখন্ড বোরোচর,চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর,ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপু মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেববাজার ও বাবুরচর ইত্যাদি এলাকাগুলোতে বিপুল পরিমাণে সরিষা চাষাবাদ হয়ে থাকে।
জেলার ৪ রাষ্ট্রয়ত্ব সোনালী,অগ্রণী,জনতা ও কৃষি ব্যাংক এ বছর ৫৪ লাখ টাকা ডাল, তৈল, মসলা ও ভূট্টা চাষাবাদে ঋণ হিসেবে বরাদ্দ প্রদান করেছেন বলে ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে ।
করেসপন্ডেন্ট
১৯ জানুয়ারি ২০২৪
এজি