সারাদেশের ন্যায় চাঁপুরের হাজীগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় আনন্দঘনো পরিবেশে উদযাপিত হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ওয়াকিফ ও মোতাওয়াল্লি আলহাজ মরহূম আহমদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) ওয়াকফ এ্যাস্টেট কর্তৃক পরিচালিত হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে ঈদের ৩টি জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি জামায়াতে মুসল্লিদের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিন মসজিদে মসজিদে মুসল্লিরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামায়াত আদায় করে মোনাজাতে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য মোনাজাত করেন।
ওয়াকিফ ও মোতাওয়াল্লি আলহাজ মরহূম আহমদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) ওয়াকফ এ্যাস্টেট কর্তৃক পরিচালিত হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামায়ত সকাল ৭ টায় অনুষ্ঠিত হয়। নামাজের ইমামতি করেন পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি আবদুর রউফ।
দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। ইমামতি করেন মাওলানা হাফেজ আনাস এবং শেষ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০ টায় ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা এমদাদুল হক। এখানে হাজার হাজার মুসল্লী ঈদের জামায়াতে অংশগ্রহণ করেন।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের ব্যবস্থাপনা ছিল চমৎকার ও ঘুচানো। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মসজিদ জুড়ে প্রত্যেকটি ঈদের জামায়াত খুবই সুন্দর পরিবেশে সম্পন্ন হয়। ছোট-বড়, ধনী-গরীব সকলে একত্রিত হয়ে ঈদের জামায়াতে নামাজা আদায় করেন। নামাজ শেষে একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় এবং কোলাকুলি করেন।
মোতোয়াল্লি ও সমাজ বিজ্ঞানী প্রিন্স শাকিল আহমেদ বলেন, ‘ পর পর ৩টি জামাত আয়োজনে মসজিদ ব্যবস্থাপনার সব দিক গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় এনে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে। লোডশেডিং থাকা সত্ত্বেও মসজিদের ভেতর উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন সোল্ারের মাধ্যমে দু’শতাধিক সিলিং ও রি-মোভিং ফ্যান চালু রেখে পুরো রমজান মাসে মসজিদে ইতেকাপে অবস্থানরত প্রায় সাড়ে তিনশ’ মুসল্লীদের ইবাদত-বন্দেগির করার প্রয়োজনে সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। ওযু ও পানির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ও পরিস্কার -পরিচ্ছনতা বজায় রাখতে প্রায় শতাধিক কর্মচারীদের প্রতি রুটিন মাফিক দায়িত্ব-কর্তব্য পালনের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরোও বলেন ,‘ হাজীগঞ্জের সর্ব পেশার মানুষ ও মুসল্লিগণ হাজীগঞ্জসহ বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে এসে ঈদুল ফিতরের পর পর অনুষ্ঠিত জামাতগুলোতে অংশগ্রহণ করায় মসজিদের গ্্রাউন্ডফ্লোর, ১ম তলা ও এর আাঙ্গিনা সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ হয়ে যায়। খুৎতবা শেষে মুসল্লিগণ অশ্রুসিক্ত নয়নে মোনাজাতে শরীক হয়ে মহান আল্লাহ তা’য়ালার নিকট অতীতের পাপ মোচনসহ দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ ও শান্তি এবং দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শান্তি-শৃংখলা বজায় থাকায় সংশ্লিষ্ঠ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ’
এ ছাড়াও হাজীগঞ্জের আলীগঞ্জ হযরত মাদ্দাখাহ মসজিদ ও মাজার শরীফে ঈদের একমাত্র জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। একমাস পবিত্র মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার পর চাঁদপুর পৌরসভাসহ জেলা জুড়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। ঈদ উদযাপন কমিটির গৃহীত সিন্ধানে জেলা সদরে পৌর এলাকার ২০টি স্থানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে জেলাশহর চাঁদপুরে বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল চাঁদপুর পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টায় প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় পৌর ঈদগাহ মাঠে। এখানে নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা আবদুল্লাহ মো. হাসান। জেলা প্রশাসক, সরকারি কর্মকর্তা, মেয়রসহ রাজনৈতিক নেতারা এ জামায়াতে অংশগ্রহণ করেন। শহরের বড় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠত হয় চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে। সকাল পৌঁনে ৮টায় অনুষ্ঠিত এ জামায়াতে নামাজের ইমামতি করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ।
এ ঈদগাহ মাঠের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আয়োজক কমিটির সভাপতি অ্যাড. সেলিম আকবর। চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সোয়া ৮টায়। ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মো. নিজামুল হক। সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় চাঁদপুর পুলিশ লাইনস মাঠে। সেখানে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুস সালাম। সেখানে পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা নামাজে অংশগ্রহণ করেন।
নামাজ শেষে পুলিশ সুপার কর্মকর্তাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।শহরের পুরাণ বাজার মধুসূধন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সোয়া ৮টায়। সেখানে নামাজের ইমামতি করেন মুফতি ইব্রাহীম খলিল মাদানী।
হাজীগঞ্জের বড়কুল পূর্ব ইউনিয়ন এন্নাতলী উত্তর পাড়া ঈদগাঁ ময়দানে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত নামাজের ইমামতি এবং নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন এন্নাতলী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. তারেক হোসাইন।
মোনাজাতে সকল শহীদসহ প্রয়াতদের মাগফেরাত,মুসলিম উম্মাহ এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর ধর্মপ্রার মুসুল্লিগণ একে অপরের সাথে কোলাকুলি করেন। এ সময় নামাজ উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাসান মিয়াজী। তিনি উপস্থিত মুসল্লীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
আবদুল গনি
১৬ এপ্রিল ২০২৪
এজি