Monday , 9 September 2024
brin tumer

প্রতি বছর দেশে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ২০ হাজার

ব্রেন টিউমার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপি দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘সবাই মিলে আমরা ব্রেন টিউমার আক্রান্তদের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারি।’

১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জার্মান ব্রেন টিউমার অ্যাসোসিয়েশন নামের দাতব্য সংস্থার উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

ব্রেন বা মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বে প্রতিবছর আড়াই লাখ মানুষ মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশে প্রতিবছর আক্রান্ত হন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এ মুহূর্তে দেশের ২০ সরকারি হাসপাতালে নিউরোসার্জারি চালু আছে।

এসব হাসপাতালে প্রতিবছর ৩ হাজার রোগীর ব্রেন টিউমার সার্জারি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিউরোসার্জিক্যাল সেন্টারগুলোকে আধুনিক যন্ত্রপাতি সুসজ্জিত করলে এবং দেশের সব জেলা হাসপাতালে নিউরোসার্জারি চালু করলে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ব্রেন টিউমার, হেড ইনজুরি প্রভৃতি বিষয়ে চিকিৎসার সুযোগ পাবে। সময়মতো অস্ত্রোপচার করলে রোগটি ভালো হয় এবং মৃত্যুঝুঁকি ও পঙ্গুত্ব কমে যায়।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনস, ‘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের নিউরো চিকিৎসকরা নানা কর্মসূচি নিয়েছেন।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. এমএস জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক উপসর্গ মাথাব্যথা। সঙ্গে বমি, ভুলে যাওয়া ও আচমকা ব্ল্যাকআউটের মতো সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে। এছাড়া ব্রেন টিউমারের আরও কিছু লক্ষণ দেখা যায়। চোখে ঝাপসা দেখা। হাতের বা শরীরের একদিক অবশ হয়ে যাওয়া। ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা। চলতে গিয়ে পড়ে যাওয়া। ব্রেন টিউমার শরীরের অন্য অংশে তৈরি হয়েও মস্তিষ্কে ছড়াতে পারে। ’

বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক এবং সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘ সাধারণত কিছু অস্বাভাবিক কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে যদি মস্তিষ্কে চাকার সৃষ্টি করে তাকে ব্রেন টিউমার বলে। সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগী মৃত্যুবরণ করতে পারে। উন্নত বিশ্বে প্রতি এক লাখ মানুষের মাঝে ১৫ জন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হন। তবে তৃতীয় বিশ্বে প্রতি এক লাখ মানুষের মাঝে চারজন এ রোগে আক্রান্ত হন। ’

বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক রুহুল কুদ্দুস বলেন,‘ দু ধরনের টিউমার আছে। একটি ধীরে ধীরে বাড়ে এবং মস্তিষ্কের অন্যত্র ছড়ায় না। এগুলোকে বিনাইন বা নির্দোষ টিউমার বলে। তবে বড় আকৃতির টিউমারের চাপে মস্তিষ্কের সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। আরেক ধরনের টিউমার, যা ক্যানসার হিসাবে গণ্য হয়, দ্রুতই মস্তিষ্কের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দেওয়া হলে কিছু ক্ষেত্রে এ টিউমার নিরাময় হয়।’

চিকিৎসকরা আরও জানান, মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার বেশ কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। বাংলাদেশে এক সময় মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার না হলেও এখন হচ্ছে। এর চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারের আকার, ধরন, রোগীর বয়স ও শারীরিক অবস্থার ওপর। সাধারণত অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, কখনো ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়। সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও নিয়মিত শরীর চর্চা করে ব্রেন টিউমার প্রতিরোধ করা যায়।

২৬ জুন ২০২৪
এজি

এছাড়াও দেখুন

dr

কমিউনিটি ক্লিনিক-উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে হবে’

তৃণমূল মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাইলে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *