Monday , 16 September 2024
editroial

ছাত্র-জনতার বিজয় : প্রতিশোধপরায়ণতা পরিহার করুন

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি থেকে পর্যায়ক্রমে সৃষ্ট গণ-আন্দোলন অবশেষে সরকার পতনের মধ্য দিয়ে বিজয়লাভ করল। সেনাবাহিনী প্রধানের অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর পাওয়ামাত্র সোমবার দুপুর থেকে পথে পথে শুরু হয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের বিজয়োল্লাস।

জুনে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার পক্ষে আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। তাদের বিক্ষোভ দমনে শক্তি প্রয়োগ করতে গিয়ে যে রক্তপাত ঘটিয়েছে- তা দেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডিবি অফিসে উঠিয়ে নেয়া, নির্যাতন,জোরপূর্বক তাদের দিয়ে আন্দোলন অবসানের ঘোষণা দেয়া, সন্ত্রাস দমনের নামে গণগ্রেফতার- সহিংসতা সব মিলে চালানো হয়েছে- তাতে সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে পড়ে।

রোববারও সারা দেশে সহিংসতায় পুলিশসহ ৯৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সোমবারও পরিস্থিতি মোড় নিচ্ছিল সহিংসতার দিকেই। তবে সেনাপ্রধানসহ বিশিষ্টজনদের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি সেদিকে আর এগোয়নি। দুপুরে আন্ত;বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সে পর্যন্ত জনসাধারণকে সহিংসতা পরিহার করে ধৈর্য ধারণের আহ্বানও জানানো হয়েছিল।

সেনাপ্রধানের দূরদর্শী পদক্ষেপের জন্য অবশ্যই তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার দাবিদার। আমরাও মনে করি, দেশ ও দশের স্বার্থে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সবার উদ্যোগী হওয়ার বিকল্প নেই। দেশবাসীর যে এক দফা ছিল, তা বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন দেশে সুযোগসন্ধানীরা যেন অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে সবার সতর্ক থাকা উচিত।

জনসাধারণের প্রতি আমাদের অনুরোধ,এ রোষ যেন দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার অবনতি না ঘটায়। ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমরাই যেন অন্যায়ের পথ না ধরি। ভুলে গেলে চলবে না,গত কদিনে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বন্দুকের নলের মুখে বুক চিতিয়ে প্রাণ দিয়েছেন আবু সাঈদ, মুগ্ধ, শাহজাহান, সবুজ আলীর মতো অকুতোভয় বীর যোদ্ধারা। তাদের আত্মত্যাগের মহিমা রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই। জনরোষে আর যেন প্রাণ ও সম্পদহানি না ঘটে, সেদিকে মনোযোগ দেয়ার পাশাপাশি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সবাইকেই উদ্যোগী হতে হবে।

আমাদের প্রত্যাশ,এমন একটি যোগ্য ও নিরপেক্ষ অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হবে,যে সরকার দ্রুততম সময়ে স্বাধীন ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে- যাতে ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ছেদ না পড়ে।

সম্পাদনা বিভাগ
১৩ আগস্ট ২০২৪
এজি

এছাড়াও দেখুন

editroial

কোরবানীর শিক্ষা ও ঈদ শুভেচ্ছা

বছর ঘুরে আবার এসেছে ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় এ উৎসব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *