নারীদের অবদমিত করে রাখার প্রয়াস স্মরণাতীত কাল থেকেই চলে আসছে। এ অপপ্রয়াস প্রতিরোধের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
নারীর প্রতি তার আহ্বান ‘জাগো নারী জাগো বহ্নি-শিখা।/জাগো হতভাগিনী ধর্ষিতা নাগিনী,/বিশ্ব-দাহন তেজে জাগো দাহিকা/জাগো মাতা, কন্যা,বধু, জায়া, ভগ্নি!/জাহ্নবীসম বেগে জাগো পদ-দলিতা।’ নজরুলের দর্শনে নারী বহ্নি শিখা; বিশ^ দহনের দাহিকা-শক্তি।
মুসলিম সমাজে তখন কঠোর পর্দা-প্রথা, নারী শিক্ষা নিরুৎসাহিত। ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীদের এই অমর্যাদা করার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন তিনি,‘বলে না কোরান, বলে না হাদিস, ইসলামী ইতিহাস,/নারী নর-দাসী, বন্দিনী রবে হেরেমেতে বারো মাস!/হাদিস কোরান ফেকা লয়ে যারা করিছে ব্যবসাদারি,/মানে নাকো তারা কোরানের বাণী- সমান নর ও নারী!’ নারীদের তিনি পূত-পবিত্র স্বর্গীয় ফুল বলে বিভূষিত করেছেন- তারা করুণাময়ের বিশেষ দান, তাদের অবমূল্যায়নে তার আক্ষেপ, ‘হায় ফিরদৌসের ফুল !/ফুটিতে আসিলে ধূলির ধরায় কেন?/অভিশপ্ত সে দেশ পরাধীন, শৌর্য-শক্তি-হীন/শোধ করেনি যে দেশ কল্যাণী সেবিকা নারীর ঋণ!/নারী অমৃতময়ী, নারী কৃপা-করুণাময়ের দান,/কল্যাণ কৃপা পায় না, যে করে নারীর অসম্মান!/নারীর পুণ্য প্রেম আনন্দ রূপ রস সৌরভ/ আজো সুন্দর করিয়া রেখেছে বিধাতার গৌরব।’ সেই গৌরবময় স্থান থেকে বিচ্যুত নারীদের মর্যাদা পুনর্প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে তিনি মুসলিম নারীদের গৌরবময় ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেছেন,নারীমুক্তির মধ্য দিয়ে মুসলিম সমাজ আবার হারানো গৌরব ফিরে পাবে,‘গুণে গরিমায় আমাদের নারী আদর্শ দুনিয়ায়/নর নহে,নারী ইসলাম ’পরে প্রথম আনে ঈমান,/আম¥া খাদিজা জগতে সর্বপ্রথম মুসলমান;/নবী-নন্দিনী ফাতেমা মোদের সতীনারীদের রানী/যার ত্যাগ সেবা স্নেহ ছিল মরুভূমে কওসর পানি/রহিমার মতো মহিমা কাহার/মোদের খাওয়ালা জগতের আলো বীরত্মে গরিমায় ॥/রাজ্যশাসনে রিজিয়ার নাম ইতিহাসে অক্ষয়,/শৌর্য সাহসে চাঁদ সুলতানা বিশে^র বিস্ময়;/ জেবুন্নেসার তুলনা কোথায় জ্ঞানের তপস্যায় ॥/আাঁধার হেরেমে বন্দিনী হল সহসা আলোর মেয়ে/সেইদিন হতে ইসলাম গেল গ্লানির কালিতে ছেয়ে।/লাখো খালেদ আসিবে আবার যদি এ নারীরা মুক্তি পায়।’ তিনি প্রত্যাশা করেন- এই অমানিশার অবসান হয়ে আশার আলোক ফুটবে,‘হেরেমের বন্দিনী কাঁদিয়া ডাকে-/যেতে নারে মসজিদে শুনিয়া আজান,/বাহিরে ওয়াজ হয়, ঘরে কাঁদ প্রাণ;/ঝুটা এই বোরখার হোক অবসান-/আঁধার হেরেমে আশা-আলোক দেখাও॥’
যখন যেখানে যে কোনো মেয়েকে তিনি দেখেছেন অগ্রগতির চেষ্টা ক’রতে, তাকে নানাভাবে উৎসাহিত করেছেন।
’মোসলেম ভারত’ পত্রিকায় এক পর্দানশীন মেয়ে কবিতা লিখে পাঠাতো; নজরুল তার মেধা বিকাশের জন্য উন্মুখ ছিলেন। চট্টগ্রামের মেয়ে শামসুন্নাহার খাতুন (বেগম শাসুন্নাহার মাহমুদ)-বিদ্যা শিক্ষায় ব্রতী, নজরুল তাকে লেখেন (১৯২৬), ‘আমাদের দেশের মেয়েরা বড় হতভাগিনী। কত মেয়েকে দেখলাম কত প্রতিভা নিয়ে জন্মাতে, কিন্তু সব সম্ভাবনা তাদের শুকিয়ে গেল।
ঘরের প্রয়োজন তাদের বন্দিনী করে রেখেছে। তাই নারীদের বিদ্রোহিনী হতে বলি। তোমায় যে আজ কাঁদতে হয় বসে বসে কলেজে পড়তে যাবার জন্য তখন তোমার কী হবে পড়ার, তা আমি ভাবতে পারি নে। তোমার অভিভাবকদের ওপর তো আমার দাবি নেই। তবু ওপর-পড়া হয়ে অনেক বলেছি।’ শামসুন্নাহার পর্দানশীন ছিলেন, তখনো নজরুলের সামনে আসেননি। তাই নজরুল সশ্রদ্ধে লিখেছিলেন, তোমার প্রকাশ দেখতে চাই আমি, তোমায় দেখতে চাইনে।
শাসুন্নাহারের’ পুণ্যময়ী’ গ্রন্থের জন্য তিনি ‘আশীর্বাদ’ লিখে দেন (১৯২৪), ‘বন্ধ কারার প্রাকারে তুলেছ বন্দিনীদের জয়-নিশান-/অবরোধ রোধ করিয়াছে দেহ, পারেনি রুধিতে কণ্ঠে গান।’ টাঙ্গাইলের মেয়ে ফজিলাতুন্নেসা। সমাজের পাহাড় প্রমাণ বাধা অতিক্রম করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে গণিতে এম এ পাশ করে বিলেতে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে যাবেন (১৯২৭)। তার সফল্যে উচ্ছ্বসিত কবি তাকে নিজের সকল সৃষ্টির সার ‘জীবনের সঞ্চিত শ্রেষ্ঠ ফুল’ ‘সঞ্চিতা’ উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন,’ আপনি বাংলার মুসলিম নারীদের রানী।
আপনার অসামান্য প্রতিভার উদ্দেশে সামান্য কবির অপার শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ ‘সঞ্চিতা’ আপনার নামে উৎসর্গ করিয়া ধন্য হইতে চাই। ‘তার বিলেত যাবার প্রাক্কালে সংবর্ধনায় গান করেন কবি, ‘আঁধারের বাতায়নে চাহে আজ লক্ষ তারা,/জাগিছে বন্দিনীরা, টুটে ওই বন্ধ কারা ॥’ অচেনা এক কিশোরী মেয়ে সুফিয়া (সুফিয়া এন হোসেন, সুফিয়া কামাল); তার কবিতা ঢাকার পত্রিকায় ছাপা দেখে উচ্ছ্বসিত কবি চিঠি লিখে তাকে অনুপ্রেরণা দেন। তার ‘সাঝের মায়া’ কাব্যগ্রন্থের ভূমিকা লিখে দেন।
আদরে যত্নে স্নেহ সুষমায় নানাভাবে তাকে উৎসাহিত করেন। সুফিয়া কামাল সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন, ‘রবীন্দ্রনাথের পর আর এক রবীন্দ্রনাথ হয়তো হবে। কিন্তু কাজী নজরুল ইসলাম আর হবে না।’
বিংশ শতাব্দীর সূচনা লগ্ন। হিন্দু বিধবাদের করুণ আকুতিতে বিষণœ বাতাস। সে বিষণœতা নজরুলের গদ্যে, ‘এই বিধবা মেয়েদের দেখলে আমার বুকের ভেতর কেমন যেন তোলপাড় করে ওঠে। বাংলার বিধবার মতো বুঝি এত করুণ- এত হৃদয়বিদারক দৃশ্য আর নেই।’
হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সকল নারী তখন শাস্ত্র-সংস্কারে নির্যাতিতা। কবি নজরুল তার ‘ধুমকেতু’ পত্রিকায় (১৯২২) নারীদের নিজস্ব মত প্রকাশের,অধিকার ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারের অবাধ ক্ষেত্র তৈরি করে দেন। হিন্দু মুসলমান সকল নারীই লিখতেন তার পত্রিকায়। সকলের একই সুর- সমাজে পুরুষ কর্তৃক অন্যায়ভাবে নারীকে নিগৃহীত করার প্রতিবাদ, মুক্তির আকুলতা।
বিরজা সুন্দরী দেবী লেখেন,‘আমাদের দেশে নারী শক্তি বড়ই নির্জীব অথচ আমরা পুরুষদের অর্ধাঙ্গিনী, তাদের অর্ধ অঙ্গ অসাড় বলেই পুরুষরা কোনো কাজে খুব উৎসাহের সঙ্গে যোগ দিতে পারে না।’ নজরুলের কথাতেও তারই প্রতিধ্বনি, ‘যে দেশে নারীরা বন্দিনী,আদরের নন্দিনী নয়/সে দেশে পুরুষ ভীরু কাপুরুষ জড় অচেতন রয়।’
বিরজাসুন্দরী লেখেন, ‘আজকাল শুনতে পাই বেদ-এ নাকি নারীর অধিকার নেই। কিন্তু একদিন এই নারীরাই পুরুষদের সমকক্ষ হয়ে বেদশাস্ত্র ও ব্রহ্মবিদ্যা আলোচনা করতেন।
এতে নারী বেদশাস্ত্রে অনধিকারী কিসে হলো বুঝতে পারছি না। হিন্দু শাস্ত্র মেনে যাঁরা চলেন তাঁরা সকলেই জানেন যে সে শাস্ত্রে জ্ঞানের ধনের অধিষ্টাত্রী-দেবী নারী; বেদের প্রসূতিও নারী বলে বর্ণিত আছে।’ বেদ শাস্ত্র বিশে^র অন্যতম প্রাচীন ধর্মশাস্ত্র। বেদের স্ত্রোত্র রচয়িতা ঋষিদের মধ্যে নারীরাও আছেন।
বেদে দেবী বন্দনাও আছে। কিন্তু বেদ ও বেদান্তের পরে রচিত ভাগবত পুরাণে বলা হলো,‘নারী, শূদ্র আর অধম-ব্রাহ্মণের পক্ষে বেদ শোনা অনুচিত (শ্রীমদ্ভাগবত ১॥৪॥২৫)’; স্ত্রী জাতিকে স্থান দেওয়া হলো পাপী নি¤œ বর্ণে, ‘স্ত্রীজাতি, শূদ্র-হূন-শবর প্রভৃতি নীচ জনেরা’ (শ্রীমদ্ভাগবত ২॥৭॥৪৬)। শাস্ত্রে নারীর এই ক্রমাবনতি এবং শাস্ত্রের দোহাই দিয়ে নারীর অবমাননার তীব্র প্রতিবাদ হয়েছে ‘ধুমকেতু’র পাতায়।
শ্রী মহামায়া দেবী ‘ধুমকেতু’তে লেখেন, ‘অনেক মনীষীর মতে নারীর শাস্ত্রে অধিকার নেই, মানুষ শাস্ত্রের জাল বুনে মানুষকে বন্দি করতে চায়। যুগাবতারগণ নারীকে পাশ কাটিয়ে চলে গেছেন। তাঁদের বিশ^াসে নারী অবিদ্যারূপিনী ছাড়া আর কিছুই নয় তাই নারী নরকের দ্বার এ কথা উচ্চারণ করতে কুণ্ঠা বোধ হয়নি। নারীর অপমানে, নারী নির্যাতনে, নারীর অধঃপতনে নারীর প্রাণ সত্যই যদি কেঁদে থাকে, তবে নারীর জন্য নারীকেই তপস্যা করতে হবে।
নারীর সত্যের আবরণ নারীকেই উন্মোচন করতে হবে।’ কবি নজরুল ইসলাম নিজেও তার কবিতায় বলেন, ‘যথা দেবীশক্তি -নারী/অপমান সহে,/ গ্লানিকর হানাহানি চলে-/ধরমের মোহে।/হানো সংঘাত, অভিসম্পাত/সেথা নিরন্তর॥’ ‘ধুমকেতু’র পাতায় মহামায়া দেবী প্রাচীন হিন্দু নারীদের উদাহরণ তুলে হিন্দু রমণীদের উদ্দীপনা জাগাতে চান, ‘অনেকেই মৈত্রেয়ী গার্গীর কথা বলে থাকি বটে কিন্তু মৈত্রেয়ী গার্গীর মত তেজস্বিনী আমরা কি এক তিলও হতে পেরেছি?’ ধর্মের দোহাই দিয়ে মুসলিম সমাজও নারী জাতিকে অবদমিত রেখেছে; তার প্রতিবাদে নজরুলের ‘বাধনহারা’ উপন্যাসের মাহবুবার চিঠি,‘আমাদের কর্ণধার মর্দরা কর্ণ ধরে যা করান তাই করি আমাদের নিজের ইচ্ছায় করার বা ভাববার মতো কিছুই যেন পয়দা হয়নি দুনিয়ায় এখনো- ভাত রেধে, ছেলে মানুষ করে আর পুরুষ দেবতাদের শ্রীচরণ সেবা করেই আমাদের কর্তব্যের দৌড় খতম।
বাবা আদমের কাল থেকে ইস্তকনাগাদ নাকি আমরা ওই দাসীবৃত্তিই করে আসছি, কারণ হজরত আদমের বাম পাজরের হাড্ডি হতে প্রথম মেয়ের উৎপত্তি। আজ সেই কথা টলবে? কোন্ কেতাবে নাকি লেখা আছে, পুরুষদের পায়ের নিচে বেহেশত, আর সব কেতাব আর আইন কানুনের রচয়িতা পুরুষ! এমন কেউ নেই আমাদের ভেতরে যিনি এই সব পুরুষদের বুঝিয়ে দেবেন আমরা হেরেম-জেলের বন্দিনী হলেও নিতান্ত চোর-দায়ে ধরা পড়িনি, আমাদেরও শরীর রক্ত-মাংসে গড়া।’
বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে যে, নরের অস্থি হতে নারীর সৃষ্টি এবং পুরুষকে পাপে প্ররোচিত করার অপরাধে বিধাতার অভিস্পাতে নারী পুরুষের কর্তৃত্বাধীন। কিন্তু কুরআনে বলা হয়নি যে নরের অস্থি থেকে নারীর সৃষ্টি বা নারী আগে পাপ করেছে বা নারী নরের অধীনস্ত; কুরআনে বলা হয় নি যে স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশ্ত। যেহেতু কুরআনে এমন কথা বলা হয়নি তাই নজরুল তার উপন্যাসে বলিয়েছেন যে এ কাহিনী পুরুষের রচিত।
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, নারী ও পুরুষের অধিকার সমান (কুরআন ২.২২৮), তারা একে অপরের অংশ (কু : ৩.১৯৫), নারীর মধ্যে রয়েছে শান্তি এবং আল্লাহ নারী ও পুরুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন মমতা ও ভালবাসা (কু : ৩০.২১)। এসকল কথা নজরুল তার ‘নারী’ কবিতায় তুলে ধরেছেন। ইসলামে নারীর মর্যাদার কথা বলিয়েছেন, ‘দুনিয়ার কোনো ধর্মই আমাদের মত নারী জাতিকে এতটা শ্রদ্ধা দেখায়নি, এত উচ্চ আসনও দেয়নি, কিন্তু আমাদের রীতি-নীতি ভয়ানক সঙ্কীর্ণতা আর গোড়ামি-ভ-ামিতে ভরে উঠেছে (বাধনহারায় মাহবুবার চিঠি)।
নজরুলের ‘ধুমকেতু’ পত্রিকায় মিসেস এম রহমান লেখেন, ‘আরববাসীগণ যখন কন্যা হত্যা করা কর্তব্যের মধ্যে পরিগণিত করেছিল, তখন হজরত মোহম্মদ (দ 🙂 তাঁর জীবন ফাতেমা-ময় করে দেখিয়েছিলেন কন্যা কিরূপ আদরণীয়া। এইটুকু করেই সন্তুষ্ট হননি, আইন দ্বারা পুত্র কন্যা সমান করে গেছেন। ইহা সত্ত্বেও তাঁর নরাধম শিষ্যরা কন্যাকে আবর্জ্জনাস্বরূপ মনে করে। উহাদের গঠিত সমাজ, উহাদের মনগড়া নিত্য নুতন ধর্মগ্রন্থ আমাদিগকে তিল তিল ধ্বংস করছে।
যতক্ষণ না বিদ্রোহী হয়ে আমরা ওদের ভুল বুঝিয়ে দেব,ততক্ষণ ওরা নিজেদের দুষ্কর্মের মাত্রা অনুভব করতে পারবে না।’ মিসেস এম রহমান আহ্বান করেন,’কে কোন্ ধর্মাবলম্বী তা দেখবার মোটেই আবশ্যক নেই আমরা নির্যাতিতা,লাঞ্ছিতা, অধিকার বঞ্চিতা নারীজাতি। অন্যায় অধর্মরূপ সমাজে সংহারিণী মূর্তিতে একবার প্রকাশ হও দলিতা ফনিণীগণ!’
‘ধুমকেতু’তে মহামায়া দেবীরও একই আহ্বান,‘অবিদ্যার বশে অজ্ঞানতার বশে আজ তোমরা যে মূর্তিতে অবস্থান করছো ও মূর্তি তো তোমাদের আসল মূর্তি নয়! সত্য মূর্তি নয়! অবিদ্যা নাশ কর,নিজের সত্য মূর্তিতে প্রকাশিত হও।’ শৈলজা লিখেছেন,‘এসো রণোন্মাদিনী শক্তিরূপিণী মা-বোনেরা আমার, তোমাদেরই ছেলেদের পাশে নির্ভীক হৃদয়ে দাঁড়াবার অসীম শক্তি নিয়ে। তুমি ছোট নও, তুমি স্বার্থান্ধ পুরুষের দাসী নও, এ কথা প্রলয় দুন্দুভির মতো বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা কর।
ভিক্ষায় স্বর্গ মিলে না- স্বর্গ মিলে বীরত্বে।’ ধুমকেতুতেই শ্রীরুমলাবালা গঙ্গেপাধ্যায় লেখেন, ‘আজ নারী বিদ্রোহিনী হইয়াছেন, পুরুষের সমকক্ষতা চাহিতেছেন-এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করিতেছেন। আজ নারী-জাতি চাহিতেছেন স্বাধীনতা, চাহিতেছেন পুরুষকে অতিক্রম করিয়া যাইতে।’
‘ধুমকেতু’র যুগ থেকে এক শতাব্দী গড়িয়েছে। নারী জাতি কোথা কোথাও পুরুষকে অতিক্রম করে গেছে। নারীরা অনেক স্বাধীনতা পেয়েছে, শিক্ষা পেয়েছে। তবু শাস্ত্রের নিগড় এখনো আগলে রেখেছে নারীর প্রকৃত মর্যাদা। দেশে দেশে আজো ধ্বনিত হচ্ছে,‘ঝুটা এ বোরখার হোক অবসান-/আঁধার হেরেমে আশা-আলোক দেখাও ॥’ সংকলিত
৯ মার্চ ২০২৪
এজি