চাঁদপুরে দু’টি ব্রিজের সরকার গৃহীত টোল চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে এ মাসে। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে আগামি ৩ বছর জুন ২০২৭ সাল পর্যন্ত সরকারের রাজস্ব খাতে এতে ১৫ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সরকারের রাজস্ব আয় হবে বলে চাঁদপুর সড়ক ও যোগাযোগ বিভাগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে।
১১ জুন মঙ্গরবার দুপুরে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় এ তথ্য জানান।
প্রাপ্ত তথ্য মতে,চাঁদপুর জেলায় ৪টি বড় রকমের ব্রিজ রয়েছে। এগুলো হলো : চাঁদপুর-রায়পুর ব্রিজ,মতলব ব্রিজ, চাঁদপুর-পুরাণ বাজার ব্রিজ এবং হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ ব্রিজ।
চাঁদপুর-রায়পুর ব্রিজটি ৩ বছর মেয়াদে ‘২০১৪ সালে প্রণীত জাতীয় টোল নীতিমালা’র আলোকে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ঐ টোল চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আগামি তিন বছরে ব্রিজটি থেকে সরকারে সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ রাজস্ব পাবে টাকা।
চুক্তি মোতাবেক এর মেয়াদ ১ জুলাই ২০২৪ শুরু এবং আগামি ৩০ জুন ২০২৭ শেষ হবে। এ ছাড়াও ১৫% ভ্যাট হিসেবে টাকা এবং ৫% আয়কর হিসেবে টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে চুক্তির শর্তমতে জমা দিতে হবে এবং টোলের সমুদয় টাকা ১২ কিস্তিতে টোলচুক্তির ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা ইজাদার বা টোল গ্রহীতাকে পরিশোধ করতে হবে।
ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ২৪৮ মিটার। যা ১৮ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল। চাঁদপুর জেলা সদরের ওয়্যারল্যাস থেকে দক্ষিণে চলে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীর ওপর ব্রিজটি নির্মিত হয় যা চাঁদপুর-রায়পুর ব্রিজ নামে পরিচিত।
মতলব সেতু আগামি ৩ বছরে ব্রিজটি থেকে সরকারের সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় রাজস্ব পাবে ৬ কোটি ২৭ হাজার ৫০ হাজার টাকা। চুক্তি মোতাবেক এর মেয়াদ ১ জুলাই ২০২৪ শুরু এবং আগামি ৩০ জুন ২০২৭ শেষ হবে। এ ছাড়াও ১৫% ভ্যাট ি এবং ৫% আয়কর সরকারের রাজস্ব খাতে চুক্তির শর্ত মতে জমা দিতে হবে।
মতলব উত্তর-দক্ষিণের সাথে সেতুবন্ধন ও ব্যবসা-বাণিজ্য,যোগাযোগ তথা কৃষিপণ্য দ্রব্য পাঠাতে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার সাথে যোগাযোগ করতেই মতলব ব্রিজটি নির্মিত হয়েছে। এ ব্রিজটি ৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর এটি নির্মিত হয়। যার দৈর্ঘ্য ৩০৪.৫১ মিটার।
চাদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের সুত্র মতে, দেশের বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় নিয়ে একটি জাতীয় টোল আদায় কমিটি গঠন করা হয়। ঐ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৪ সালে সারাদেশের ব্রিজগুলোর রাজস্ব আদায় নিয়ে একটি ‘ জাতীয় টোল আদায় নীতিমালা’ করা হয়। জাতীয় ঔ নীতিমালায় দেশের সব জেলায় ১৯৯ মিটার পর্যন্ত সকল ব্রিজের টোল আদায় যোগ্য। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এতে রাজস্ব আদায় করতে পারবে বলে বিবেচিত হবে।
জাতীয় টোল আদায় নীতিমালা অনুযায়ী চাঁদপুরের মতলব ব্রিজ ও চাঁদপুর-রায়পুর এ ব্রিজ দুটিসহ অপর দুটিও টোল আদায়যোগ্য। চাঁদপুরের অপর দু’টি বড় ধরনের ব্রিজ পুরাণ বাজার-চাদপুর এবং হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ ব্রিজ দু-টোই বর্তমানে ২০১৪ সালের টোল আদায় নীতিমালার পূর্বেই টোলমুক্ত ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সুতরাং এ নীতিমালার আওতায় হলেও টোল আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না।’
এদিকে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ ব্রিজটি ২০ নভেম্বের ২০০২ সাল পর্যন্ত টোল আদায় চুক্তি হয়। যার মেয়াদ ৯ নভেম্বর ২০১০ সাল পর্যন্ত ছিল। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ,পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন সময়ে ২০১০ সালে টোল আদায় মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১১৬.৬১ মিটিার। চাঁদপুর-পুরাণ বাজার ব্রিজটি ১১ মার্চ ২০১০ সালে টোল চুক্তিবদ্ধ হয়। ১১ মার্চ ২০১১ সালে ব্রিজটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,চাঁদপুরের ব্যবসায়ীমহল, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও চাঁদপুরবাসীর আবেদনের ফলে ব্রিজটির টোল মুক্ত ঘোষণা করা হয়। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ২৬০.৫৯ মিটার।
প্রসঙ্গত,আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে জাতীয় নীতিমালা ২০১৪ সালে গৃহীত হয়। এতে সরকারের পরিকল্পনা, যোগাযোগ,
সেতু,অর্থ সংস্থাপন মন্ত্রণালয় সহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে জাতীয় টোল আদায় নীতিমালা ২০১৪।
কোনো ব্রিজের টোল ফ্রি করা বা না করার বিষয়টি সম্পূর্ণ কমিটির সিদ্ধান্তের ব্যাপার। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইচ্ছা করলেই টোল আদায় চুক্তি ’বা ‘টোল মুক্ত ঘোষণা করতে পারে না বলে জানা যায় । ১২ জুন ২০২৪
আবদুল গনি,
১২ জুন ২০২৪
এজি