জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী ২৫ মে । তাঁর উপন্যাস,নাটক, সঙ্গীত ও দর্শনে নজরুলের অনবদ্য উপস্থিতি বাংলা সাহিত্যকে উজ্জ্বল করেছে। গায়ক, অভিনেতা,সম্পাদক পরিচয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এ অহংকারী ব্যক্তি নিপীড়িত-অসহায় আরতিকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর কবিতা কোটি যুবকের রক্তে জ্বালিয়েছে। এ মহাপুরুষের ১২৫তম জন্মদিন এ বছর । এ প্রতিভাধর বাঙালি ১৩০৬ জৈষ্ঠের ১১ এবং ২৪ মে ১৮৯৯ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
কবি তার শৈশব, কৈশোর এবং যৌবনে সংগ্রাম করেছেন। তিনি বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯১৭ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সে সময়ের প্রভাবশালী কবি-সাহিত্যিকদের সংস্পর্শে আসেন।
ধূমকেতু পত্রিকা ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯২১ সালে,১৪১ লাইনের বিদ্রোহী কবিতা লিখে সেই সময়ের বাংলাভাষী জনগণ সহ ভারতের জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছিল। ১৯২০ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত তার সমস্ত কাজের সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না।
তবে তিনি ২,৮০০টি গান, ৯০০টি কবিতা, ১০০টি প্রবন্ধ, ৫৫টি বই, ২৫টি নাটক, ১৮টি গল্প, ১৯৪টি গজল ও ইসলামী গান এবং ৪৫০টি শ্যামা গান রচনা করেছেন। . তার মধ্যে নার্গিসের বাড়িতে থাকতেই তিনি ১২০টি কবিতা ও ১৬০টি গান লিখেছেন। ২৩ বছরের এ স্বল্প সময়ে বাংলা ভাষার আর কোনো কবি বা লেখক এত বেশি রচনা রেখে যাননি।
‘আনন্দময়ীর আগমন’ কবিতার জন্য নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মাত্র ২২ বছরের লেখনী জীবনে তিনি প্রায় ৩ হাজার গান রচনা করেছেন, লিখেছেন অসংখ্য কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস। সাহিত্য ছাড়াও নজরুল সঙ্গীত ও চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। নিজের ‘ধ্রুব’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্য, কবিতা, সমাজ ও সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
তার কবিতা, গান ও গজল পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে সমানভাবে সমাদৃত। ২২ বছর বয়সে ‘বিদ্রোহী’ কবি হিসেবে নজরুল যে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তা হাজার বছরের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
চিকিৎসার জন্য তিনি ইংল্যান্ড, ভিয়েতনাম, জার্মানি ও রাশিয়া যান। ১৯৭২ সালে কবি নজরুলকে সপরিবারে স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এ মহান বিদ্রোহী কবি। কবির ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।
নজরুল গবেষণা পরিষদ, চাঁদপুরের কর্মসূচি: ২৫ মে ২০২৪ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নজরুল গবেষণা পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা। জাতীয় কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং নতুন প্রজন্মের কাছে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম ও অবদানের প্রতি চাঁদপুর শহরের ‘পীর মহসিনউদ্দিন পীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে’ ৯ম-১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুপুর ২টায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানশিক্ষক মিসেস রওশনারা বেগম।
প্রধান অতিথি থাকবেন নজরুল গবেষণা পরিষদ,চাঁদপুরের সভাপতি ও মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মো. মোশারফ হোসেন।
আলোচক হলেন: সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ফতেহ-উল-বারী রাজা,সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি, শিক্ষক নেতা,লেখক ও প্রাবন্ধিক জাহাঙ্গীর হোসেন,মো.মুখলেছুর রহমান ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রকাশনা-গবেষণা সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মো.ওয়ালিদ হোসেন খান, মতলব ওয়াইশিয়া কামিল মাদ্রাসা ।
আবদুল গনি
২১ মে ২০২৪