Monday , 9 September 2024
gaza--

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত : নিহত বেড়ে ৩১,৩৪১

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে কমপক্ষে ৩১ হাজার ৩ শ ৪১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৩ হাজার ১ শ ৩৪ জন। খবর আল-জাজিরার।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসকে নির্মূলের অভিযানের নামে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ এবং শিশুরা।

এদিকে গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার জন্য জড়ো হওয়া লোকজনের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার উত্তরাঞ্চলে এ ধরনের হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও দেড় শতাধিক মানুষ। এই হামলাকে একটি নতুন পূর্বপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ বলে অভিহিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইসরায়েলের হামলায় এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো গাজা। ইসরায়েলের হামলা থেকে বাদ পড়েনি ধর্মীয় স্থাপনাও। ফলে রমজান মাসেও নামাজের স্থান পাচ্ছেন না গাজাবাসী।

গাজার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গাজায় অবস্থিত ১ হাজার ২০০ মসজিদের মধ্যে অন্তত এক হাজার মসজিদ পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী,গত ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলির হামলায় ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজসহ শতাধিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব নিহত হয়েছেন।

গাজার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রমজান মাসের তারাবি নামাজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ মসজিদগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। এমনকি অজু করার জন্যও মিলছে না পানি।

এদিকে মার্কিন সিনেটর চাক শুমার ইসরায়েলি নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েলির বর্তমান চরমপন্থি সরকার এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ‌‘শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাধা’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা : নিহত ২৯

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের পৃথক দুটি হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রথম ঘটনায় গাজার মধ্যাংশের আল-নুসেইরাত শিবিরের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়। পরে গাজার উত্তরাংশের একটি গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকবহরের জন্য অপেক্ষা করে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণে অন্তত ২১ জন নিহত ও দেড় শ জনেরও বেশি আহত হয়।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলির সামরিক বাহিনী ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে হামলার কথা অস্বীকার করে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনগুলোকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে।

পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় গাজা ভূখণ্ড প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, নিহত হয়েছে ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আর আহত ৭১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ২৩ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে।

কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে, ত্রাণের জন্য হুড়োহুড়ি করছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,২৯ ফেব্রুয়ারি গাজা সিটির কাছে ত্রাণ বিতরণের জন্য অপেক্ষারতদের ভিড়ের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়। তবে এ ঘটনার জন্য ইসরায়েল ত্রাণের জন্য বেপরোয়া লোকজনের হুড়োহুড়িকে দায়ী করে বলেছে, নিহতদের অনেকে পদদলিত হয়ে অথবা ত্রাণবাহী ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গাজার মধ্যাংশের দাইর আল-বালাহ এলাকার একটি বাড়িতে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নয়জন নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন।

গাজার বাসিন্দারা জানিয়েছেন,বৃহস্পতিবার রাতভর ইসরায়েলির বাহিনীগুলো ধারাবাহিকভাবে দক্ষিণের রাফা শহরসহ পুরো ভূখণ্ডজুড়ে আকাশ ও স্থল হামলা চালিয়ে গেছে।

১৬ মার্চ ২০২৪
এজি

এছাড়াও দেখুন

hamas

যুদ্ধের পর গাজায় স্বাধীন ফিলিস্তিনি সরকার চায় হামাস

হামাস যুদ্ধবিরতি আলোচনার সময় পরামর্শ দিয়েছে, নির্দলীয় ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত একটি স্বাধীন সরকার যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *